Investments
এমার্জেন্সি ফান্ডের সাথে যেকোনও আর্থিক অনিশ্চয়তার মোকাবিলা করুন
PhonePe Regional|2 min read|28 June, 2021
কোভিড-19 অতিমারী আমাদের জীবনকে নানাভাবে বিধ্বস্ত করেছে। ব্যক্তিগত জীবনে যেমন এর সাংঘাতিক প্রভাব পড়েছে, ঠিক তেমনই এই অনিশ্চয়তার জন্য আমাদের আর্থিক জীবনও টালমাটাল হয়েছে। এই ধরণের কঠিন পরিস্থিতির আভাস হয়তো আমরা আগে থেকে পাই না, তবে সেগুলির দরুণ সৃষ্ট অনাগত আর্থিক অনিশ্চয়তা এড়াতে আমরা পূর্বপরিকল্পনা করে রাখতে পারি। আর ঠিক সেই কারণেই এমার্জেন্সি ফান্ড তৈরি করা একটি বিচক্ষণ পদক্ষেপ।
এমার্জেন্সি ফান্ড কী?
এমার্জেন্সি ফান্ড হল আপনার আয়ের এমন একটি অংশ, যা আলাদা করে সরিয়ে রাখলে ভবিষ্যতে আর্থিক অনিশ্চয়তার ঘটনায় আমাদের কাজে লাগবে। এটা কিছুটা মোটরসাইকেল চালানোর সময় হেলমেট পরা বা গাড়ি চালানোর সময় সিটবেল্ট লাগানোর মতোই। হেলমেট পরা বা সিটবেল্ট লাগানো জরুরী কারণ এটি আপনাকে গুরুতর আহত হওয়ার হাত বাঁচায়। ঠিক সেরকমই এমার্জেন্সি ফান্ড আপনাকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে।
ধরা যাক, ভবিষ্যত লক্ষ্য পূরণের জন্য আপনি বর্তমানে যা যা বিনিয়োগ করছেন, তার মধ্যে বাড়ি কেনা, বাচ্চার পড়াশুনার জন্য টাকা জমানো ইত্যাদির মতো পরিকল্পনা রয়েছে। এমন সময়ে, অতিমারীর মতো সঙ্কট এসে উপস্থিত হলে, স্বাভাবিকভাবেই আপনাকে তৎকালীন আর্থিক সমস্যা সমাধান করতে গিয়ে হয়তো ভবিষ্যত লক্ষ্যের সাথে আপোষ করতে হবে। কিন্তু যদি এমার্জেন্সি ফান্ড হাতে থাকে, তাহলে এই ধরণের ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেতে পারেন। এমার্জেন্সি ফান্ড ভবিষ্যতের লক্ষ্যগুলিকে প্রভাবিত তো করেই না, বরং অপরিকল্পিত ব্যয়ের সাথে মোকাবিলা করতে আপনাকে সাহায্য করবে।
এমার্জেন্সি ফান্ড শুরু করার ব্যাপারে সাহায্য করার জন্য আপনাকে এখানে কিছু পরামর্শ দেওয়া হল:
- এমার্জেন্সি ফান্ড হিসেবে অন্তত 6 মাসের খরচের টাকা আলাদা করে রাখুন। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার মাসিক খরচ ₹10,000 হয় তাহলে এমার্জেন্সি ফান্ড তৈরি করে অন্তত ₹60,000 সরিয়ে রাখুন।
- আমাদের অনেকের পক্ষেই হয়তো একসাথে এত টাকা বিনিয়োগ করা সম্ভব নয়, তাই মাসিক SIP-র বিকল্প বেছে নিয়ে প্রতিমাসে কিছু টাকা করে বিনিয়োগ করলে প্রয়োজনীয় রাশিটি জোগাড় করতে পারেন।
- কোনও আর্থিক সঙ্কট মোকাবিলার জন্য যদি আপনি এমার্জেন্সি ফান্ডটি ব্যবহার করে ফেলেন তবে সেটিতে পুনরায় টাকা ভরতে ভুলবেন না।
- প্রতিবছর আপনার ব্যয় পুনর্বিবেচনা করুন এবং খরচ বাড়ার সাথে সাথে এমার্জেন্সি ফান্ডটিও বাড়ান।
এমার্জেন্সি ফান্ডের বিষয়টি বোঝার পর, আসুন দেখে নিই কোথায় আপনি এই রাশিটি বিনিয়োগ করতে পারেন।
লিকুইড ফান্ড — আর্থিক সঙ্কটের জন্য সঞ্চয়ের অন্যতম উপায়
এবার আমরা জেনেছি যে এমার্জেন্সি ফান্ড কীভাবে আর্থিক অনিশ্চয়তা মোকাবিলায় আমাদের সহায়তা করতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন হল, এই রাশিটি সেভিংস অ্যাকাউন্টে না রেখে আলাদা করে রাখা এতো গুরুত্বপূর্ণ কেন? সেভিংস অ্যাকাউন্টে অতিরিক্ত টাকা রাখা থাকলে অন্য যেকোনও প্রয়োজনে টাকাটি খরচ হয়ে যেতে পারে। সুতরাং, এমার্জেন্সি ফান্ডের টাকা আলাদা করে বিনিয়োগ করলে আপনি এই রাশিটি অন্য কোনও প্রয়োজনে নয় বরং শুধুমাত্র আর্থিক সঙ্কটের সময়ে ব্যবহার করবেন বলে চিহ্নিত করতে পারবেন।
এমার্জেন্সি ফান্ড তৈরি করার অন্যতম উপায় হল লিকুইড ফান্ডে বিনিয়োগ করা। লিকুইড ফান্ড হল এক ধরণের মিউচুয়াল ফান্ড যা স্বল্পমেয়াদি বিনিয়োগের পক্ষে আদর্শ এবং এটি সেভিংস অ্যাকাউন্টের বিকল্প হিসাবেও কাজ করে। এই ফান্ডটি আপনার টাকা শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ না করে সরকারী এবং ব্যাঙ্ক সিকিউরিটির মতো নিরাপদ খাতে বিনিয়োগ করে।
লিকুইড ফান্ডে বিনিয়োগের সুবিধা:
- সেভিংস অ্যাকাউন্টের চেয়ে বেশি রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা
- কোনও লক ইন পিরিয়ড নেই^
- কোনও ন্যূনতম ব্যালেন্স বজায় রাখার দরকার নেই
- মাত্র ₹100-র মতো কম টাকা থেকে বিনিয়োগ করতে পারেন
- ₹50,000* পর্যন্ত ইনস্ট্যান্ট টাকা তোলার সুবিধা*
লিকুইড ফান্ডে আপনার টাকা যেমন সহজেই অ্যাক্সেস করা যায় এবং সেভিংস অ্যাকাউন্টের তুলনায় বেশি রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, ঠিক তেমনই এমার্জেন্সি ফান্ড তৈরি করতেও এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
যেকোনও আর্থিক অনিশ্চয়তার হাত থেকে আপনার ভবিষ্যতের লক্ষ্যগুলিকে সুরক্ষিত রাখতে আজই এমার্জেন্সি ফান্ড তৈরি করুন।
অস্বীকৃতিজ্ঞাপন:
^ লিকুইড ফান্ডে কোনও লক ইন পিরিয়ড নেই কিন্তু 1 দিন, 2 দিন, 3 দিন, 4 দিন, 5 দিন এবং 6 দিনের মধ্যে টাকা তুলে ফেললে এক্সিট লোড বাবদ যথাক্রমে 0.007%, 0.0065%, 0.006%, 0.0055%, 0.005% এবং 0.0045%-এর মতো সামান্য একটি রাশি প্রযোজ্য হবে।
* আপনার বিনিয়োগের মোট 90% অথবা দৈনিক সর্বাধিক ₹50,000-র মধ্যে যেটি কম হয় সেই রাশিটি তুলতে পারেন।
মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ বাজারের ঝুঁকিসাপেক্ষ। বিনিয়োগ করার আগে অনুগ্রহ করে স্কিম সংক্রান্ত সব ডকুমেন্ট ভালোভাবে পড়ুন।